সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, ভারত এদেশের সোনালী আঁশ পাট শিল্প ধ্বংস করেছিল। আজকে তারা দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তারা এদেশের শ্রমিকদের পেটে লাথি মারতে চায়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৩ টায় ঢাকা জেলা সাভার উপজেলার আশুলিয়ার পলাশবাড়ী আমার স্কুল মাঠে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের ঢাকা জেলা উত্তরের উদ্যোগে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ হারুনুর রশিদ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল আমিন-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা ও ঢাকা জেলা উত্তরের আমীর মাওলানা আফজাল হোসেন, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক ঐক্যের সভাপতি এএএম ফয়েজ হোসেন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন শহীদ, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহরাইনে সুলতান বাহার, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, ফেডাশেনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, মো. মহিব্বুল্লাহ ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার প্রমুখ।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার পর এদেশের পাটের গুদামে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। ভারতকে সহযোগিতা করেছিল স্বৈরাচারের দল আওয়ামী লীগ। ভারত আমাদের দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করার মাধ্যমে এদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতে চায়। তাদের গভীর ষড়যন্ত্র যেকোনো মূল্যে রুখে দিতে হবে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হলে এদেশের মালিকদের তেমন ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে মূলত খেটে খাওয়া শ্রমিকদের। শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে যাবে। শ্রমিকদের ঘরে ভাত থাকবে না। ভারতীয় দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মালিক-শ্রমিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
অধ্যাপক খান আরও বলেন, আমরা সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সাম্য প্রতিষ্ঠা করার বিধান একমাত্র ইসলামের কাছেই আছে। আর কারো কাছে নেই। এদেশের শ্রমিকদের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে দাবি করছি শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে। আমরা চাই মালিক যা খাবে শ্রমিকরা তাই খাবে এই নীতি চালু করতে। এটি রাসুলের(সা.) বিধান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। তারা স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা আনসার, রিকশা চালক ও সনাতনধর্মীদের উসকে দিয়ে এদেশে প্রতিবিপ্লব করতে চেয়েছিল। তারা এসব ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে নতুন করে পোশাক শিল্প ধ্বংস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আমরা সোচ্চার আছি, তাদের এই কু-পরিকল্পনাও ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। বিগত স্বৈরাচার সরকার গত ১৫ বছরে এ শিল্পকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে অন্তবর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বৈঠকের পর বৈঠক করেছে। তারা শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা শ্রমিকদের দাবি পূরণে আন্তরিক। এখন শ্রমিকদের দায়িত্ব হচ্ছে ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করা। সরকার শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে। আশাকরি আগামী দিনে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি সরকার পূরণ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
তিনি শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। তাদের কুপরামর্শে গার্মেন্টস বন্ধ করা যাবে না। হঠাৎ করে রাজপথে নামা যাবে না। কারখানা ভাংচুর করা যাবে না। সরকার যে ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে তা সকল শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।