ঢাকা’র অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় একটি শ্রমিক কলোনীর ২২টি কক্ষ আগুনে পুড়ে ভস্মিভুত হয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন কলোনীর মালিক সহ ১৬টি পরিবার। অগ্নিকাণ্ডে আগুনে কক্ষে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, জমির দলিল ও সমস্ত মালামাল পুড়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী কলোনী মালিকের। এ ঘটনায় ওই শ্রমিক কলোনীর ১৬টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তবে মহাসড়কে অবরোধ থাকায় ফায়ারসার্ভিস ঘটনাস্থলে যেতে না পারায় এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) আশুলিয়ার কলতাসূতি বাড়ল এলাকায় ওই কলোনীতে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে, শনিবার (৫অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতাসূতী গ্রামের বাড়ল পাকারমাথায় অবস্হিত জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন শ্রমিক কলোনীতে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। এমন খবর পেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত হন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নিতে। পরবর্তী সময় দ্বিতীয়বারের মতো জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় প্রতিনিধি দল অগ্নিকান্ডে ক্ষতিপ্রস্থদের তালিকা করে জামাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠায়। এরপর তৃতীয় দফায় ১৬টি পরিবারের জন্য প্রায় ২০ প্রকারের খাদ্য দ্রব্য সামগ্রী উপহার হিসেবে পৌঁছে
দেয় ক্ষতিগ্রস্হ ১৬ টি পরিবারের মাঝে। এসময় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্থদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেন শ্রমিক কলোনির মালিক ও আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা আমরা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবোনা তবে আমাদের সংগঠন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভাই বোনদের জন্য যত সামান্য কিছু উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী আর্থিক উপহার প্রদান করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক কলোনীর ভাড়াটিয়া সুমন, আফজাল, পাপিয়া, আবু সুফিয়ান সহ অন্যান্যরা জানান, ওই দিন শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই কলোনীর দক্ষিণ-পূর্ব কর্ণারের একটি কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। শ্রমিক কলোনির মালিক মো: জয়নাল আবেদীন বলেন, মুহুর্তের মধ্যেই আগুন সমস্ত কলোনীতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, টিভি, ফ্রিজ, জমির দলিল সহ ২২ টি কক্ষে থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলেও তারা আসতে পারেনি শ্রমিক আন্দোলনে মহাসড়ক অবরোধের কারণে। পরে নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি তাই এত বড় ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা। এসময় উপস্থিত গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষতিগ্রস্হ পরিবারের সদস্যরা ও কলোনীর মালিক সরকার ও বিত্তবান্দের কাছে সহযোগীতা কামনা করেন তারা।
বাড়ির মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, তার কক্ষে থাকা নগদ চার লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণ, জমির দলিল এবং ফার্নিচারসহ সব পুড়ে গেছে। এছাড়া তার মোট ২২ টি কক্ষ এবং কক্ষে থাকা সমস্ত কিছু পুড়ে গেছে। সবগুলা কক্ষেই ভাড়াটিয়া ছিল। ভাড়াটিয়া কক্ষগুলোতেও অনেক মালামাল ছিল সেগুলা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অনেকে কারখানায় থাকার কারণে আসতে পারেনি। অগ্নিকান্ডে তার এক কোটি টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘটনায় তিনি সহ ১৬ পরিবার নি:স্ব হয়ে গেছে।
এব্যাপারে ডিইপিজেড ফায়ারসার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী জানান, সেদিন মহাসড়কে অবরোধ থাকায় আমরা ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। তবে কাশিমপুরের সারাবো ফায়ারসার্ভিস সেখানে যেতে বের হয়েছিল।