অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে উপদেষ্টা দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। এ দাবিতে আজ সোমবার (১২নভেম্বর) সকাল থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। তাদের দাবি, অন্য সময়ের মতো বর্তমানেও রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ অবহেলিত হচ্ছে। বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এই দুই বিভাগের বাসিন্দারা। রংপুরের উন্নয়ন ও অবহেলিত হলেও সার্বিকভাবে দেশের জাতীয় স্বার্থে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রংপুরকে সব সময় এগিয়ে থাকতে দেখা যায়।
২০২৪ জুলাইয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে প্রথম শহীদ আবু সাঈদ এর আত্বত্যাগের মধ্যদিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার হয় সারাদেশের ছাত্র জনতা জেগে উঠে, যার কারণে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়ে ছিনিয়ে আনে গণঅভ্যুত্থান।
উপদেষ্টার দাবিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের শিক্ষাথীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
এ সময় তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা করার দাবি জানান। নগরীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ শেষে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে উপদেষ্টা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি করেছেন।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এই দুই বিভাগ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা। সমাবেশে সমন্বয়ক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে বারবার টালবাহানা এবার আর সহ্য করা হবে না। আগামীকাল (মঙ্গলবার) অফিস সময়ের মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে ২৪ বিপ্লবের মাস্টারমাইন্ড আখতার হোসেন ভাইকে উপদেষ্টা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসছে।’ স্বৈরাচার সরকারের মতো বর্তমানেও রংপুরকে বিচ্ছিন্ন করার রূপরেখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুহম্মদ রাজিবুজ্জামান হৃদয়।
গতকাল রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারে আরো তিন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেন। এনিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা পরিষদে উপদেষ্টার সংখ্যা দাঁড়াল ২১ জনে। তবে নতুন তিন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘শুধু একটি বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টা জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই! তার ওপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে!’
এদিকে ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অসংখ্য ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।