সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার জামায়াতে ইসলামীর আমির—একজন দৃষ্টিহীন মানুষ। দুই চোখে দেখতে পান না তিনি, কিন্তু নেতৃত্বে তাঁর প্রজ্ঞা ও কর্মদক্ষতা অদ্বিতীয়। শারীরিক সীমাবদ্ধতা তাঁকে কখনও পিছিয়ে দেয়নি, বরং প্রমাণ করেছেন—যোগ্যতা, আদর্শ ও আত্মনিবেদনের জায়গায় অন্ধকার বলে কিছু নেই।
বাংলাদেশের রাজনীতির পরিমণ্ডলে সাধারণত পরিচয়, আর্থসামাজিক প্রভাব বা শারীরিক সামর্থ্যকে গুরুত্ব দিয়েই নেতৃত্ব বাছাই হয়। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর একটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য হলো—এখানে প্রাধান্য পায় আদর্শিক দৃঢ়তা, আমল ও যোগ্যতা। আর সেই নীতির বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছেন এই অন্ধ নেতাটি।
দলীয় সংগঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে যখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এখনও প্রভাব, চেহারা বা পরিচয় বিবেচনা করে, তখন জামায়াতে ইসলামীর এই নেতৃত্ব নির্বাচনের ধারা সমাজে নতুন বার্তা দেয়। একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকে থানা আমিরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল। এবং এতে প্রমাণ হয়—এই দলে সত্যিকারের নেতৃত্ব সংকট নেই। আদর্শিক লোকদেরই স্থান হয় সামনে।
স্থানীয়রা জানায়, শারীরিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি শাল্লা থানায় সংগঠনের কার্যক্রম অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করে চলেছেন। তাঁর ভেতরের চোখ, চিন্তা ও ঈমানি স্পৃহাই যেন তাঁর পথের আলো।
এই প্রেক্ষাপটে এক তরুণ কর্মী বলেন,
“আমি জামায়াতে ইসলামীর প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত। এর অন্যতম কারণ হলো—এখানে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য চোখ থাকতে হয় না, থাকতে হয় অন্তরের আলো। অন্য কোনো দলে একজন অন্ধ ব্যক্তিকে কি ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো দায়িত্বও দেওয়া হতো? জামায়াত ব্যতিক্রম।”
এই ব্যতিক্রমধর্মী নেতৃত্বের নমুনা হয়তো ছোট একটি থানার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ, কিন্তু এর বার্তা সুদূরপ্রসারী। নেতৃত্বে যোগ্যতা ও নৈতিকতার এই মূল্যায়ন আমাদের রাজনীতির জন্য এক শিক্ষনীয় আদর্শ হয়ে থাকতে পারে।