
ঢাকা: রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ ও সাভার অঞ্চলের অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং নাগরিক ভোগান্তি কমাতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা থেকে প্রেরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে—কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে উন্নীত করা অথবা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা।
একইসঙ্গে সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া ইউনিয়নসমূহকে একত্র করে “সাভার সিটি কর্পোরেশন” গঠনের প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ নিয়ে উদ্বেগ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেরানীগঞ্জ ও সাভার দ্রুত নগরায়ণের পথে এগোলেও, প্রশাসনিক কাঠামো ও মৌলিক সেবা ব্যবস্থায় রয়েছে গুরুতর ঘাটতি।
কেরানীগঞ্জে এখনো কোনো পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন না থাকায় সড়ক, ড্রেনেজ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নাগরিকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
অন্যদিকে, সাভার ও আশুলিয়া অঞ্চলে শিল্পাঞ্চল, শ্রমিকবসতি ও আবাসিক এলাকার চাপ সামলাতে বিদ্যমান পৌরসভার সক্ষমতা খুবই সীমিত।
প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য
সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
“ঢাকা শহরের প্রসার ও জনসংখ্যার চাপে কেরানীগঞ্জ উপজেলা দ্রুত নগরায়ণের মুখোমুখি হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে কেরানীগঞ্জ একটি আধুনিক ও প্রাণবন্ত উপশহর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।”
একইভাবে সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় নাগরিক সেবা, পরিবেশ সংরক্ষণ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একটি সিটি কর্পোরেশন গঠন অপরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রেরিত চিঠিতে জানানো হয়,
সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর প্রথম পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উত্থাপিত এ প্রস্তাবটি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সদয় অনুমোদন করেছেন।
তাঁর অনুমোদনের পর স্থানীয় সরকার বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে।
সম্ভাব্য সুফল
প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে—রাজধানীর জনসংখ্যার চাপ হ্রাস পাবে,কেরানীগঞ্জ ও সাভার পরিকল্পিতভাবে উন্নত হবে,নাগরিক সেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে,পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে,এবং ঢাকা মহানগরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি ভারসাম্যপূর্ণ নগর কাঠামো গড়ে উঠবে।
সরকারের লক্ষ্য
সরকার মনে করছে, কেরানীগঞ্জ ও সাভার—এই দুটি এলাকা পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা গেলে ঢাকার বোঝা কমবে, নাগরিক জীবন হবে স্বাচ্ছন্দ্যময়, এবং রাজধানীর চারপাশে গড়ে উঠবে আধুনিক উপশহর ও টেকসই নগর ব্যবস্থাপনা মডেল।
নিউজ ডেস্ক :- তারিখ: ১২ অক্টোবর ২০২৫
সূত্র: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।