বান্দরবানে থানচিতে ভরদুপুরে বাজারে ফাঁকা গুলি চালিয়ে স্থানীয় শাখায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, তিনটি গাড়িতে করে ডাকাতরা এসে ব্যাংকে প্রবেশ করে। এসময় কিছু ফাঁকা গুলির আওয়াজও পাওয়া যায়। পরে তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা লুট করে নিয়েছে ডাকাতরা। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত বা কত টাকা লুট হয়েছে এ বিষয়ে কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
থানচি বাজারের ২০০ থেকে ৩০০ গজের ভেতরেই রয়েছে থানচি থানা, একটি বিজিবি ক্যাম্প এবং থানচি বাজারের শেষ মাথায় রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি চেকপোস্ট।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচি সদরে শাহজাহান পাড়া দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করেছেন। প্রবেশের পর থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা যা পেয়েছে তা নিয়ে চলে যায়। এরপর তারা আবার ওই তিন গাড়িতে করে শাহজাহান পাড়া দিকে চলে যায়। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন সদস্যরা এসব হামলা ও টাকা লুট করতে পারে বলে ধারনা করেছেন স্থানীয়রা।
ব্যাংকের টাকা তুলতে অপেক্ষা থাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ডাকাতরা পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মতো ব্যাংকের ভেতরে ছিল। এই সময়ের মধ্যে তারা গুলি চালিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায়।
তাঁরা আরো জানান, ব্যাংকের আশপাশের এলাকায় অস্ত্রের মুখে সবার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তারা ব্যাংক দুটির ভেতরে ঢুকে পড়ে। ব্যাংক ভেতরে ঢুকেই ডাকাতরা গ্রাহক, কাউন্টার ও ভল্ট থেকে সব টাকা বস্তায় করে নিয়ে বের হয়ে যায়।
থানচি বাজারে ঘটনার সময় উপস্থিত বেশ কয়েকজন জানান, ডাকাতদের মধ্যে ১৫-২০ জন অস্ত্র নিয়ে বাজারের পাশে সাঙ্গু সেতুতে পাহারা দিচ্ছিল। একই সময়ে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে অন্তত ২০ জন করে ঢুকে পড়ে। তারা লুট করে আবার প্রায় একই সময়ে বের হয়ে যায়।
তারা আরও জানান, ঘটনার সময় ব্যাংকের সামনে বেশ কয়েকজন পুলিশ ও আনসার সদস্য ছিলেন। সশস্ত্র ডাকাতরা হাঁকডাক দিয়ে বাজারে ঢুকে পড়লে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পালিয়ে যান।
থানচি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান, দুটি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি হয়েছে। সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণের টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতরা ব্যাংকের ভল্ট খুলতে পারেনি। তারা কাউন্টারে রাখা ও গ্রাহকদের উত্তোলন করা টাকা নিয়ে গেছে। ভীতি সৃষ্টি করতে ডাকাতরা ব্যাংকের ভেতরে ব্যাপক গোলাগুলি করেছে।