সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে সাভার আশুলিয়ায় পোশাক শিল্প কল-কারখানায় কর্মরত বসবাসকারী মানুষ ও শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গন সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে চমক দেখিয়ে ঢাকা ১৯ আসনের নয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের আশুলিয়া থানার সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য পদত্যাগ করা স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটাধিকার প্রয়োগের পর সাভার উপজেলা চত্বরে ফল প্রকাশ করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ।
ইউপি চেয়ারম্যান এর পদ থেকে স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা- ১৯ (সাভার -আশুলিয়া) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান দুই বারের এমপি এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যাবস্হাপনা প্রতিমন্ত্রী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নৌকা মার্কার প্রার্থী ডাঃ এনামুর রহমানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের দু’জনকেই বিপুল ভোটে পরাজিত করেছেন পুরো শরীরে কলীজা খ্যাত স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে ২৯২ কেন্দ্রের সর্বশেষ হিসেবে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। সাভার পৌর এলাকায় তার ফলাফল সন্তোষজনক না হলেও নিজ ধামসোনা ইউনিয়ন সহ পাশের দুই ইউনিয়ন পাথালিয়া, শিমুলিয়া ইউনিয়নের প্রাপ্ত ভোট তার বিজয় নিশ্চিত করেছে। সাইফুল ইসলামের এই নির্বাচনে পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইয়ারপুর ইউপি চেয়ারম্যান তার সঙ্গে ছিলেন।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতৃবৃন্দও দলীয় প্রতীকে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে থাকলেও তার সমর্থক ও ভোটাররা তার পাশে ছিলেন শুরু থেকেই। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে না পেয়েও তিনি হতাশা না হয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ কুরবানী করে নির্ঘুম দিনরাত খেয়ে না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন ভোটারদের কাছে।
নির্বাচনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে সাইফুল ইসলামের প্রাপ্ত ভোট ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট। এছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নৌকার মনোনীত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের নৌকা ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়ে তৃতীয় এবং সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো: তৌহীদ জং মুরাদ এর ঈগল প্রতীক ৭৬ হাজার ২০২ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছে। ৮ হাজারের অধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন সদ্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও ঢাকা ১৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরও সাতজন। তারা সবাই জামানতও হারিয়েছেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কাঁঠাল প্রতীক নিয়ে আইরিন পারভীন ১৩৩ ভোট, গনফ্রন্টের মাছ প্রতীক নিয়ে নুরুল আমীন ১১৩ ভোট, তৃনমুল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে মাহাবুবুল হাসান ২৮০ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীক নিয়ে মিলন কুমার ভঞ্জ ১৮৪ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীক নিয়ে ইসরাফিল হোসেন সাভারী ৫৬৫ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির একতারা প্রতীক নিয়ে মোঃ জুলহাস ১৬৯ ভোট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নোঙর প্রতীক নিয়ে সাইফুল ইসলাম মেম্বার পেয়েছেন ১৪০ ভোট।
ঢাকা-১৯ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৬ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬৮ ও নারী ভোটার ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩৫ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা ১৩ জন। এসব ভোটারদের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৬৫০ জন। বৈধ ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৯ ভোট। বাতিল হয়েছে ৪ হাজার ৯১ ভোট।