নুর আলম সিদ্দিকী মানু : ময়মনসিংহে মহাসড়কে মাসে ৭৮লাখ টাকার চাঁদাবাজি সিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হওয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় দেশব্যাপী আলোচিত হয়। উক্ত জনদূর্ভোগ দূর করার লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ময়মনসিংহসহ সারাদেশে র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের গোয়েন্দা দল তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পাইকারী বাজারসহ বিভিন্ন স্থানের চাঁদাবাজির তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উৎপাদনকারীদের নিকট হতে পন্য সামগ্রী সংগ্রহ পূর্বক ট্রাক/পণ্যবাহী যানবাহনে পাইকারী ও খুচরা বাজারে পৌছানোর সময় পথিমধ্যে নামে বে-নামে ভূয়া রশিদ অথবা কখনো কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিপুল পরিমান অর্থ চাঁদাবাজি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় অধিনায়ক র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন ও এএসপি জাহিদ হাসান এর নেতৃত্বে সকাল ০৮.০০ঘটিকা থেকে ১১.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ময়মনসিংহ এর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য সর্বমোট ৫০ জন কে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় চাঁদা আদায়ের নগদ ৬০,৮৬১ .টাকা, ৪৩ টি মোবাইল এবং বিপুল পরিমান চাঁদা আদায়ের রশিদ। কোতোয়ালি থানাধীন শম্ভুগঞ্জ ব্রীজ এলাকা থেকে সর্বমোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়েছে ।
মোঃ সিদ্দিক এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।গ্রেফতারকৃত মোঃ সিদ্দিক ও তার সহযোগী আসামিদের চাঁদাবাজি করার জন্য নিয়োগ করে। কোতোয়ালি থানাধীন শম্ভুগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে সর্বমোট ৭ জন গ্রেফতার করা হয়েছে ।
মোঃ মোস্তাফা এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে। কোতোয়ালি থানাধীন রহমতপুর বাইপাস ও আকুয়া বাইপাস এলাকা থেকে ১১ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার কৃত মোঃ লাল মিয়া ও লুৎফর রহমান বসির এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহের রহমতপুর বাইপাস ও আকুয়া বাইপাস এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।
মুক্তাগাছা সদর এলাকা থেকে ০৭ জন গ্রেফতার। গ্রেফতার কৃত রাসেল এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা এলাকায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদা আদায় করে থাকে।
তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ এলাকা থেকে ১৩ জন আটক। গ্রেফতার কৃত কামাল হোসেন এর নেতৃত্বে ময়মনসিংহের কাশিগঞ্জ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত চাঁদাবাজির সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। তারা ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে। গ্রেফতারকৃতরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতি রাতে ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার উপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে পণ্যবাহী যানবাহন ময়মনসিংহের প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের নিকট অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও প্রদান করে থাকে। ড্রাইভাররা তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের গাড়ি ভাংচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধর সহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন হতে ১৫০-২৫০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। পণ্যবাহী কোন গাড়ি দেখলেই তারা লেজার লাইটের আলো নিক্ষেপ করে তা থামিয়ে কৌশলে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করে থাকে। বিশেষ করে মধ্য রাতে ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় যখন পণ্যবাহী ট্রাক ঢাকা প্রবেশ করে উক্ত সময় সড়কে এমন চিত্র শুরু হয়।
উক্ত চক্র ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থান হতে প্রতি রাতে পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের নিকট হতে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে বলে জানা যায়।যারা আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে পণ্য মজুদ করে কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে র্যাব – ১৪ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা করা হয়েছে।